সূচীপত্র

শুক্রবার, এপ্রিল ২৭, ২০১৮

কুত্তা ও কুত্তার বাচ্চাগুলি


মিন্টু শাহজাদা

মোহাম্মদপুর থাইকা হাইটা হাইটা গেছিলাম আমি।
গেছিলাম শাহবাগ।
ওইখানে আমার জন্যে কেউ খাড়ায়া নাই জাইনাও
গেছিলাম ফুটপাতের ভিড় ঠেইলা হাইটা হাইটা অনেকদিন আগে।
এবং ফেরত আসছিলাম যদিও মোহাম্মদপুরে কেউ ছিল না খাড়ায়া।
এইভাবে হাইটা হাইটা অনেকদিন গেছে আমার।

আমি হাইটা যাওয়ার সময় দেখতাম যে মেয়েরা রিক্সায় বইসা চুমা খায়।
কোলের বাচ্চারে চুমা খাইতে খাইতে রিক্সা দিয়া যায় এবং ছেলেগুলাও খায়
রিক্সার হুড তুইলা দিয়া এবং পার্কের বেঞ্চিতে বইসা, কখনও দোকানে
বইসা বইসা চা খায়, সিগারেট ধরাইয়া খায়, হাসে। কানতেও দেখছি।
মেয়েরা কান্দে। 

ছেলেরা না কানলেও কান্দার মত চেহারা কইরা রাখতে রাখতে দূরের
ছাতিম গাছটার দিকে চায়া থাকে। এইসব দেখছি আমি এবং দেখছি যে
দুইটা কুত্তা জট লাগছে যাত্রী ছাউনির নিচে।
বাঁশ দিয়া কুত্তার জট ছাড়াইতে ছেলেগুলি বাড়ি মারতেছে, হাসতেছে,
মেয়েগুলিও হাসতেছে দেখলাম, চুমা খাইতেছে ছেলেগুলি। বাড়ি খাইয়া
কুত্তা দুইটার জট না ছুটলেও ক্যাও ক্যাও করে ওইগুলি এবং রাস্তার জট ছুটাইতে
গাড়িগুলি প্যাঁ প্যাঁ করে। গাইল পারে রিক্সাঅলাগুলি রিক্সাঅলাদের
এবং প্রাইভেটকারঅলাগুলিও রিক্সাঅলাদের।  

রিক্সার জট ছুটার পর রাস্তা পার হইয়া এইপারে আসছিলাম আমি
এবং দেখছিলাম যে ভিক্ষুকগুলি সভা করতেছে এবং পাশে কয়েকটা
কুত্তাও আছে দেখছিলাম। সভার মধ্যে কুত্তাগুলিও ঘেউ ঘেউ করতেছিল   
এমনকি মাদি কুত্তাগুলিও। মাদি কুত্তাগুলার বাচ্চাদের জন্যে মায়া হইছিল আমার
কারণ আমি দেখছিলাম যে, মাদি কুত্তাগুলার ওলান ঝুইলা পড়ছিল
এবং ওইগুলির সাথে কোন কুত্তার ছাও ছিল না বরং মরদ কুত্তা ছিল অনেক!
এইভাবে দুধ ছাড়া কুত্তার বাচ্চাগুলান কই কই যানি পই পই কইরা ঘুরতেছিল
অভিভাবকহীন। যেহেতু কুত্তার বাচ্চারা অগো বাপদের চেনে না
কিংবা ওদের বাপ চেনে না অগো।

ভার্সিটিতে এইরকম অনেকগুলি কুত্তার বাচ্চা দেখছিলাম আমি।
মরদ এবং মাদি কুত্তাও।
এবং দেখছিলাম যে কুত্তার বাচ্চারা খামাখা ঘেউ ঘেউ করত
হলের সামনে। টিএসসিতে এবং মুক্তমঞ্চেও কুত্তাদের দেখছিলাম।

আমারও একটা কুত্তা ছিল অনেক আগে, ঘেউ ঘেউ করত।
একদিন ঘুম থেইকা উইঠা দেখি কুত্তাটা কই যানি চইলা গেছে।
আর আসে নাই।
কুত্তাটা যেইখানে গেছে, ওইখানে হয়ত কেউ খাড়ায়া ছিল ওর জন্যে
কিংবা ওর জন্যে আমি খাড়ায়া ছিলাম না ভাইবা চইলা গেছিল।
আর কোনদিন আসে নাই।

আইজ মনে হইল আমার হারায়া যাওয়া কুত্তাটা সাতমসজিদ রোড দিয়া
হাইটা হাইটা যাইতেছে ভাদ্দুইরা গরমের মধ্যে জিহ্বাটা বাইর কইরা নিয়া।
হয়ত মোহাম্মদপুরে যাবে ওইটা কিংবা শঙ্করে। খাড়ায়া রইছে কেউ ওইখানে,
ওর জন্যে।
আমিও যাইতেছি সাতমসজিদ রোড দিয়া মোহাম্মদপুরে।বাসে।
বরফের শরবতের গ্লাস হাতে আমার বউ দরজার কাছে খাড়ায়া রইছে।
আমার জন্যে।

২৭/০৪/২০১৮, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন